হাসিন জাহান
ঢাকা, বাংলাদেশ

আমি হাসিন। অনেক চড়াই উৎরাই পেরিয়ে পৌঁছেছি জীবনের প্রায় মাঝ বরাবর। পথ চলতে চলতে অনেক কিছু দেখা হয়েছে, জানা হয়েছে, শেখা হয়েছে। অনেক সময় চোখের দেখার বাইরেও অনেক বিষয় অনুধাবন করেছি ভিন্নভাবে। প্রত্যেকটা মানুষের জীবনই বোধহয় এক একটা উপন্যাস। আমার জীবনের উপন্যাসের পাতাগুলো থেকে কিছু পাতা ছিঁড়ে ডিজিটাল স্মৃতির খাতায় জমা রাখার জন্য এই ব্লগ। আর তাতে যদি কারো ভালো লাগে, সেটা হবে বাড়তি পাওনা। একটাই জীবন, তাই এর প্রতিটি মুহূর্ত হয়ে উঠুক আনন্দময় আর আলোকিত!

খোঁজ করুন
খোঁজ করুন
জীবন যেখানে যেমন

কখনও জব কখনও ক্রিয়েশন

on
September 7, 2018


গতকালকে ভাসমান সব্জিচাষের উপর ছোট একটা ইন্টারভিউ দিলাম। যিনি অনুষ্ঠানটি নির্মাণ করছেন, তিনি কোনো কারণে আসতে পারেননি। তবে, টিভি চ্যানেল থেকে ক্যামেরাসমেত প্রায় ৫-৬ জনের একটা টিম ইন্টারভিউ রেকর্ড করতে এসেছেন। উনারা বিনয়ের সাথে জানালেন যে আমার জন্য বরাদ্দকৃত সময় খুব কম, মাত্র আট মিনিট। আমি এমনিতেই কথা বলি ঝড়ের গতিতে, দাড়ি-কমা-বিহীনভাবে। তার উপর কৃষিবিদ্যায় আমার যে দৌড়, তাতে আমার জানা সবটুকু বলতেও মিনিট পাঁচেকের বেশি লাগার কথা না।

বাস্তবেও তাই হলো। ঠিক চার মিনিটের মাথায় আমার পুরো বর্ণনা শেষ। এক শটে ‘ওকে’! কিন্তু চিত্রধারণকারিরা নাখোশ। ঘড়ি দেখে জানালেন আমাকে আরো চার মিনিট কথা বলতে হবে। আমার তো ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা! দ্রুত বিকল্প উপায় খুঁজতে থাকলাম। গরু নিয়ে ফেললাম সোজা নদীতে! ভাসমান সব্জি চাষের উপকারিতা, নারীদের সম্পৃত্ততা, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও ক্ষমতায়ন, শিশুর পুষ্টি – আমাকে আর পায় কে? যেন জগতের সব সমস্যার সমাধান কেবল সব্জিতেই নিহিত!

পুরো টিম খুব দক্ষ এবং দ্রুত হাতে কাজ গুছিয়ে ক্যামেরা-লাইট-রেকর্ড শেষ করলেন। তারপরে আমি স্বভাবসুলভভাবে তাদের চা খেতে বললাম। তারা সাগ্রহে চা খেতে বসলেন, বুঝলাম এই মূহুর্তে চা-টা তাদের খুব দরকার ছিল।

চা খেতে খেতে আমি তাদের সাথে কথা চালিয়ে যাচ্ছি – তাদের রুটিন, কাজের ধরন, ভাললাগা-মন্দলাগা। কথার ফাঁকে জানলাম যিনি আমাকে ক্যামেরাবন্দী করলেন, তার পছন্দের কাজ চলচ্চিত্রে। বললেন, তানভীর মোকাম্মেলের সাথে করা তার প্রিয় কাজগুলো। এক পর্যায়ে জানালেন তিনি হুমায়ূন আহমেদের সাথেও কাজ করতেন। যত শুনছি, ততই সংকুচিত হচ্ছি। যিনি ক্যামেরার এত সূক্ষ্ম কাজ করেন তাকে একটু আগে আমার যেরকম ‘ভাতেমরা’ গোছের দৃশ্য ধারণ করতে হলো, তা’ নিতান্তই লজ্জ্বাজনক। যা হোক, জানতে চাইলাম – আজকের মতো এ ধরনের স্টেরিওটাইপ কাজ করতে কেমন লাগে? অকপটে বললেন, এগুলো আমার ‘জব’ আর এতক্ষণ আপনাকে যেগুলোর কথা বললাম সেগুলো আমার ‘ক্রিয়েশন’! কথাটার ভেতর এত গভীরতা ছিল যে আমি অভিভূতের মতো শুনছি। ঠিক এই সময়ে তার সহকর্মীদের ডাকে উনাকে উঠে যেতে হলো। উনি যখন বিদায় নিয়ে ঘর থেকে বেরুচ্ছেন, সে সময়ে আস্তে করে বললাম, তানভীর মোকাম্মেল ভাই আমার কাজিন। এর পরে উনার সাথে দেখা হলে আমার ডাকনাম ‘—‘ বলবেন, অনেক বছর দেখা না হলেও আশা করি আমাকে চিনবেন। এবার উনার অবাক হবার পালা। পৃথিবীটা আসলেও খুব ছোট!

উনি চলে যাবার পরে সারাদিন আমার মাথায় কেবল একটা বিষয় ঘুরছে: ‘জব’ এবং ‘ক্রিয়েশন’। আমার অনেক দিনের অজানা প্রশ্নের উত্তর যে এত সহজে পেয়ে যাবো, সেটা আমার ভাবনার বাইরে ছিল। সারাদিনের কাজের চাপে আমাদের জবটাই করা হয়, ক্রিয়েশনের অবকাশ কোথায়!

ফেইসবুক কমেন্ট - Facebook Comments
TAGS
8 Comments
  1. Reply

    shoeb amran

    September 7, 2018

    Apa,
    Excellent writing!

    • Reply

      হাসিন জাহান

      September 7, 2018

      Thanks a lot!

    • Reply

      হাসিন জাহান

      September 7, 2018

      Thanks!

  2. Reply

    Farzana

    September 7, 2018

    Nice apa…

    • Reply

      হাসিন জাহান

      September 7, 2018

      Thank you 🙂

    • Reply

      হাসিন জাহান

      September 8, 2018

      Thank you!

  3. Reply

    এস আই টি - কক্সবাজার

    September 8, 2018

    Awesome writing !
    Lot’s of people can learn more effective things from your blog.

    • Reply

      হাসিন জাহান

      September 8, 2018

      Thanks a lot!

Leave a Reply to Farzana / Cancel Reply