ভারত যাত্রার প্রস্তুতিপর্ব
ক’দিন আগে ভারতের ভিসার আবেদনের জন্যে যমুনায় ভিসা সেন্টারে গেলাম। না, শপিং বা ঈদ উদযাপন কোনটাই উদ্দেশ্য না, নেহায়েতই যেতে হবে অফিসিয়াল কাজে। ঠিক ঈদের পরদিনই রওনা হতে হবে।
সেখানে পৌঁছে দেখি এক বিরল দৃশ্য! শুধুমাত্র যমুনার বিল্ডিংয়ে ঢোকার জন্য ভিসাপ্রার্থীদের লাইন প্রায় মেইন রোড পর্যন্ত গড়িয়েছে। যাইহোক, সেই লাইন ‘ম্যানেজ’ করে যখন ভিতরে পৌঁছুলাম, তখন আরেক এলাহি কান্ড! মানুষে মানুষে সয়লাব – তিল ধারণের জায়গা নেই। টোকেনে দেখি আনুমানিক অপেক্ষার টাইম দুইঘন্টা আটচল্লিশ মিনিট! বসার জন্য একটা সিটও খালি নেই, এমনকি দাঁড়ানোর জায়গারও সংকট। এসি তার ঠান্ডা করার সর্বোচ্চ ক্ষমতা অতিক্রম করেছে অনেক আগেই!
প্রচন্ড গরমে সবাই দরদর করে ঘামছে। দাঁড়িয়ে থাকা একজনের সাথে অন্যজনের দূরত্ব প্রায় শূন্যের কাছাকাছি! যারা পাসপোর্ট জমা নিচ্ছেন তাদের অবস্থাও গলদঘর্ম। পাসপোর্ট জমার সময় আমার পুরনো ৫টি পাসপোর্টের বোঝাও তারা ঘাড়ে নিলেন! কেন কে জানে! তাহলে ই-পাসপোর্টের আর কাজ কী যদি পুরোনো তথ্যই না পাওয়া যায়! যাই হোক ‘থিওরী অফ রিলেটিভিটি’র দুর্দশার দীর্ঘ সময় পার করে অবশেষে পাসপোর্ট জমা পড়লো। আবার সেই একই পরিক্রমায় বায়োমেট্রিকও দিতে হলো। অবশেষে মুক্তি!
তবে এতোকিছুর পরেও ভাললাগার যে বিষয়টি জানানোর জন্য এতবড় লেখার সূচনা, এবার সেটা বলি-
এই গাদাগাদি করে দাঁড়ানো পুরোটা সময় কোনরকম অযাচিত স্পর্শ – ধাক্কা কোনটারই অভিজ্ঞতা হয়নি। পাশাপাশি কিছু মানুষের আন্তরিকতা মন ছুঁয়ে গেছে। অচেনা মানুষের সাথে টুকরো টুকরো গল্প, জায়গাহীন জায়গায় একটু বাড়তি জায়গা করে দেয়ার চেষ্টা, প্রামে বসা শিশুকে ঘিরে চারপাশের মানুষের উৎকন্ঠা আর সর্বোপরি ভিসা অফিসারের মুখে চিলতে হাসি!
পাদটীকা:
১. ঈদের আগে যে এত মানুষ ভারতে যায় তা জানা ছিল না। তবে কেন যে যায় সেটি বুঝিনি।
২. ভিসা পেয়েছি! ধন্যবাদ অনেকেরই প্রাপ্য। সেকথা আরেকদিন হবে।
ফেইসবুক কমেন্ট - Facebook Comments